ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সঠিক খাদ্য পরিকল্পনা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। এই ৭ দিনের খাদ্যতালিকা সহজ, বাঙালি খাবারের সঙ্গে মানানসই এবং পুষ্টিকর। এটি কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) সমৃদ্ধ খাবারের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ায়। তবে, খাদ্যতালিকা শুরু করার আগে অবশ্যই ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন, কারণ প্রত্যেকের শরীরের চাহিদা ভিন্ন হতে পারে।
সাধারণ নির্দেশিকা
-
ছোট ছোট মিল: দিনে ৫-৬ বার অল্প পরিমাণে খান।
-
চিনি এড়িয়ে চলুন: চিনি, মিষ্টি, মধু, গুড় এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়ান।
-
কম GI খাবার: ব্রাউন রাইস, ওটস, মুগ ডাল, সবুজ শাকসবজি বেশি খান।
-
তেল কমান: রান্নায় তেল কম ব্যবহার করুন।
-
পানি ও তরল: দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। লেবু পানি বা নারকেল পানি খেতে পারেন।
-
নিয়মিত সময়: প্রতিদিন একই সময়ে খাবার খান।
দিন ১
সকালের নাস্তা (৮:০০):
-
১ বাটি ওটস (চিনি ছাড়া দুধে রান্না)
-
৫-৬টি কাজুবাদাম
-
১ কাপ গ্রিন টি (চিনি ছাড়া)
সকালের নাস্তা (১০:৩০):
-
১টি পেয়ারা বা ১টি ছোট আপেল
দুপুরের খাবার (১:০০):
-
১ কাপ ব্রাউন রাইস
-
১ বাটি মুগ ডাল (তেল কম)
-
১ বাটি মিক্সড সবজি (গাজর, ফুলকপি, বিন)
-
১ বাটি শসার সালাদ
বিকেলের নাস্তা (৪:০০):
-
১ কাপ টক দই (চিনি ছাড়া)
-
১ মুঠো ভাজা চানাচুর (তেল ছাড়া)
রাতের খাবার (৮:০০):
-
২টি রুটি
-
১ বাটি মুরগির স্টু (তেল কম)
-
১ বাটি পালং শাকের তরকারি
দিন ২
সকালের নাস্তা (৮:০০):
-
১টি সেদ্ধ ডিম
-
১ টুকরো ব্রাউন ব্রেড
-
১ কাপ কালো কফি (চিনি ছাড়া)
সকালের নাস্তা (১০:৩০):
-
১টি কমলালেবু
দুপুরের খাবার (১:০০):
-
১ কাপ খিচুড়ি (ব্রাউন রাইস ও মসুর ডাল)
-
১ বাটি লাউয়ের তরকারি
-
১ বাটি শসা ও টমেটোর সালাদ
বিকেলের নাস্তা (৪:০০):
-
১ কাপ গ্রিন টি
-
১ মুঠো বাদাম
রাতের খাবার (৮:০০):
-
১টি রুটি
-
১ বাটি মাছের ঝোল (তেল কম)
-
১ বাটি ব্রকোলি বা মিক্সড সবজি
দিন ৩
সকালের নাস্তা (৮:০০):
-
১ বাটি সুজি (চিনি ছাড়া, দুধে রান্না)
-
১টি ছোট কলা
-
১ কাপ গ্রিন টি
সকালের নাস্তা (১০:৩০):
-
১টি ছোট নাশপাতি
দুপুরের খাবার (১:০০):
-
১ কাপ ব্রাউন রাইস
-
১ বাটি মুগ ডাল
-
১ বাটি বাঁধাকপির তরকারি
বিকেলের নাস্তা (৪:০০):
-
১ কাপ টক দই
-
১টি পেয়ারা
রাতের খাবার (৮:০০):
-
২টি রুটি
-
১ বাটি মুরগির ঝোল (তেল কম)
-
১ বাটি শসার সালাদ
দিন ৪
সকালের নাস্তা (৮:০০):
-
১ বাটি ওটস (চিনি ছাড়া)
-
৫-৬টি বাদাম
-
১ কাপ কালো কফি
সকালের নাস্তা (১০:৩০):
-
১টি ছোট আপেল
দুপুরের খাবার (১:০০):
-
১ কাপ ব্রাউন রাইস
-
১ বাটি মসুর ডাল
-
১ বাটি মিক্সড সবজি (ঝিঙে, ফুলকপি)
বিকেলের নাস্তা (৪:০০):
-
১ কাপ গ্রিন টি
-
১ মুঠো ভাজা চানাচুর
রাতের খাবার (৮:০০):
-
১টি রুটি
-
১ বাটি মাছের স্টু (তেল কম)
-
১ বাটি পালং শাক
দিন ৫
সকালের নাস্তা (৮:০০):
-
১টি সেদ্ধ ডিম
-
১ টুকরো ব্রাউন ব্রেড
-
১ কাপ গ্রিন টি
সকালের নাস্তা (১০:৩০):
-
১টি কমলালেবু
দুপুরের খাবার (১:০০):
-
১ কাপ খিচুড়ি (ব্রাউন রাইস ও মুগ ডাল)
-
১ বাটি লাউয়ের তরকারি
-
১ বাটি শসার সালাদ
বিকেলের নাস্তা (৪:০০):
-
১ কাপ টক দই
-
১ মুঠো বাদাম
রাতের খাবার (৮:০০):
-
২টি রুটি
-
১ বাটি মুরগির তরকারি (তেল কম)
-
১ বাটি মিক্সড সবজি
দিন ৬
সকালের নাস্তা (৮:০০):
-
১ বাটি সুজি (চিনি ছাড়া, দুধে রান্না)
-
১টি ছোট কলা
-
১ কাপ কালো কফি
সকালের নাস্তা (১০:৩০):
-
১টি পেয়ারা
দুপুরের খাবার (১:০০):
-
১ কাপ ব্রাউন রাইস
-
১ বাটি মাছের ঝোল (তেল কম)
-
১ বাটি ব্রকোলি বা সবজি
বিকেলের নাস্তা (৪:০০):
-
১ কাপ গ্রিন টি
-
১ মুঠো ভাজা চানাচুর
রাতের খাবার (৮:০০):
-
১টি রুটি
-
১ বাটি মুরগির স্টু
-
১ বাটি শসা ও টমেটোর সালাদ
দিন ৭
সকালের নাস্তা (৮:০০):
-
১ বাটি ওটস (চিনি ছাড়া)
-
৫-৬টি কাজুবাদাম
-
১ কাপ গ্রিন টি
সকালের নাস্তা (১০:৩০):
-
১টি ছোট আপেল
দুপুরের খাবার (১:০০):
-
১ কাপ ব্রাউন রাইস
-
১ বাটি মুগ ডাল
-
১ বাটি পালং শাকের তরকারি
বিকেলের নাস্তা (৪:০০):
-
১ কাপ টক দই
-
১টি কমলালেবু
রাতের খাবার (৮:০০):
-
২টি রুটি
-
১ বাটি মাছের ঝোল (তেল কম)
-
১ বাটি মিক্সড সবজি
গুরুত্বপূর্ণ টিপস
-
খাবারের পরিমাণ: আপনার ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী খাবারের পরিমাণ নির্ধারণ করুন।
-
নিষিদ্ধ খাবার: ভাতি, পোলাও, পরোটা, মিষ্টি, ফাস্ট ফুড এবং কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন।
-
শরীরচর্চা: প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম (যেমন যোগা) করুন।
-
রক্তে শর্করা পরীক্ষা: নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করুন এবং ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন।
-
ঘুম: প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান। ঘুমের অভাব রক্তে শর্করার মাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে।
-
মানসিক চাপ: ধ্যান বা গভীর শ্বাসের ব্যায়াম করে মানসিক চাপ কমান।
এই খাদ্যতালিকা নিয়মিত অনুসরণ করলে এবং ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চললে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং আপনি সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবেন। সুস্থ থাকুন!